আজ ১০ জানুয়ারি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৭২ সালের এই দিনে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তিলাভ করে তার স্বপ্নের স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে ফিরে আসেন। দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেন বঙ্গবন্ধু। দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল শনিবার দেওয়া বাণীতে বলেন, ‘জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের এই মাহেন্দ্রক্ষণে আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি প্রয়োজনে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে হলেও ত্রিশ লাখ শহীদ ও দু’লাখ নির্যাতিত মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখব। জাতির পিতা যে অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন, সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখব, ইনশাআল্লাহ।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতা পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য দীর্ঘ ২৪ বছর সংগ্রাম করেছেন। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম সকল ক্ষেত্রেই তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। জেল-জুলুম সহ্য করেছেন, সবসময় দূরদর্শী সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এবং ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে গিয়ে দলকে সুসংগঠিত করেছেন। তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৭০-এর নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে।’ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করেন শেখ হাসিনা।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতা ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধু সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। স্বাধীনতা ঘোষণার পর পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে তাকে গ্রেপ্তার করে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে আটক রাখা হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে ৯ মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যদিয়ে জাতি বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করে।