অটো রাইস মিলগুলোর দাপটে উত্তরাঞ্চলে প্রায় ১২ হাজার মিল-চাতাল একে একে বন্ধ হয়ে গেছে। অটো রাইস মিলগুলোর সাথে ধান ক্রয়ে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারা খাদ্য অধিদপ্তরের বরাদ্দ কমিয়ে দেয়া, উৎপাদন খরচ বেশি, শ্রমিক সংকটসহ নানা কারণে বন্ধ হয়েছে এসব মিল চাতালগুলো। এসব মিল চাতালের অনেকেই ভিন্ন পেশা অথবা বেকার সময় কাটাচ্ছেন। ফলে মিল চাতালগুলো এখন অতিত হতে বসেছে। এসময় রংপুরের মাহিগঞ্জ, দিনাজপুরের পুলহাট, বগুড়া, নওগাঁ, রাজশাহীর মিল চাতাল থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রাক চাল ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যেত। চাল ব্যবসাকে ঘিরে এসব এলাকায় গড়ে উঠে হাজার হাজার মিল চাতাল। এক দশক আগেও শত শত মানুষের হাক ডাকে মুখর থাকত মিল চাতাল এলাকা।
এখন অটো রাইসমিলগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ধানের অভাবে মিল চাতাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক স্থানকে মনে হয় একটি মৃত শহর। সরেজমিনে দেখা গেছে রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ এলাকার আলহাজ্ব মকবুল হোসেন, আজগর আলী, ফারুক হোসেন, আব্দুল মতিন, দেলোয়ার হোসেন চৌধুরীসহ অনেকের মিল চাতাল বন্ধ করে ভিন্ন ভিন্ন পেশা ধরেছেন। বন্ধ হওয়া চাতাল মালিকরা জানান উত্তরাঞ্চলে হাতে গোনা ৪শ থেকে ৫শ জন বড় ব্যবসায়ী ও অটো রাইমিল মালিক ধান চালের ব্যবসাকে নিয়ন্ত্রন করছেন।
বড় ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতিযোগীতায় টিকতে না পেরে বাধ্য হয়ে তারা তাদের মিল চাতাল বন্ধ করে দিয়েছে। তারা আরও জানান অটো রাইস মিল মালিক ও বড় বড় ব্যবসায়ীরা ধানের জন্য আগাম ব্যাপারীদেরকে টাকা দিয়ে রাখে। ফলে ব্যাপারীরা ছোট খাট মিল চাতালগুলোর কাছে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ প্রকাশ করে না। খাদ্য অধিদপ্তর থেকে মিল চাতালগুলোতে বরাদ্দ কমিয়ে তা অটো রাইসমিলগুলোকে দেখা হয়েছে।
যদিও বা দু একজন বরাদ্দ পায় তাদের চালও অটো রাইস মিলে নিয়ে গিয়ে নতুন করে পরিশোধিত করতে হয়। এছাড়া উৎপাদন খরচও কয়েকগুন বেড়ে যাওয়ায় অটো রাইমিলগুলোর সাথে তারা প্রতিযোগিতায় কুলিয়ে উঠতে পারছে না। অপরদিকে শ্রকিম সংকটও রয়েছে প্রকট। রংপুর ধান চাতাল মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কাসেম জানান অটো রাইস মিলগুলোর ধান চালের চাহিদা বৃদ্ধি মানুষ এখন অটো রাইস মিলের চাল খেতে বেশি পছন্দ করে। তাই অটো রাইস মিলগুলোর মজুদ বেড়েছে। কারণ তাদের সারা বছরই মিল চালু রাখতে হয়। তিনি আরো জানান উত্তরাঞ্চলের প্রায় ১২ হাজার মিল চাতালের মধ্যে অধিকাংশই বন্ধ রয়েছে।