বুধবার, ৩১ মে ২০২৩, ০৯:১৫ অপরাহ্ন

কম ভোগান্তিতে ভিন্নরকম ঈদ যাত্রা

এপ্লাস অনলাইন
  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৩

 

নানা প্রস্তুতির কারণে এবার ভিন্নরকম ঈদযাত্রা প্রত্যক্ষ করছে দেশবাসী। এ ধরনের প্রস্তুতি আরও সর্বাত্মক ও সমন্বিত হলে ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকরা।

ঈদের ছুটিতে অনেকটাই ফাঁকা ঢাকা। রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে চিরচেনা যানজট নেই। সড়ক, নৌ, রেলপথে এবার ভোগান্তি অনেক কম। সড়কে চাপ কম থাকায় দূরপাল্লার বাসযোগে অনেকটাই নির্বিঘ্নেই রাজধানী ছাড়ছেন ঈদযাত্রীরা। বাড়তি চাপের কারণে ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-রংপুরসহ বিভিন্ন মহাসড়কে গাড়ির গতি ছিল তুলনামূলক কম।

দিনব্যাপী গতকাল নির্বিঘ্নেই যানবাহন চলাচল করেছে। তবে কিছু এলাকায় সড়কে বাড়তি চাপ ছিল। আর শতভাগ অনলাইনে টিকেট ও স্টেশনে প্রবেশের পথে তিন দফায় কড়াকড়ি চেকের কারণে বিনা টিকেটের যাত্রী কম থাকায় এবার রেলে ঈদযাত্রায়ও স্বস্তির আভাস দেখা যাচ্ছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় সদরঘাটে লঞ্চযাত্রীদের চাপও তুলনামূলকভাবে কম। ঈদের আগে দম বন্ধ করা ভিড় নেই সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। অনেকটাই সুশৃঙ্খলভাবে যাত্রী নিয়ে টার্মিনাল ছেড়েছে চাঁদপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা এবং ঝালকাঠিগামী লঞ্চগুলো। নৌপথে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঢাকার রাস্তায় ঈদযাত্রীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এই জনস্রোত আজ শুক্রবারও অব্যাহত থাকবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, নগর গণপরিবহনে ঘরমুখী যাত্রীদের চাপ রয়েছে। সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী, কমলাপুর, সদরঘাট, মহাখালী ও গাবতলীমুখী পরিবহনে ভিড় সবচেয়ে বেশি। এসব স্টেশন থেকে কেউ বাসে, কেউ ট্রেনে, কেউবা লঞ্চে চেপে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। কোথাও রাস্তা ফাঁকা থাকলেও সিগন্যালগুলোয় যানজট সৃষ্টি হয়। গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালীর বাসটার্মিনালের টিকেট কাউন্টারগুলোতে ঈদযাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে এদিন। একই চিত্র কমলাপুর রেলস্টেশন ও সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনালেও। বাস কাউন্টারে দায়িত্বরতরা জানিয়েছেন, এবার ঈদের আগে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় কম। পদ্মা সেতু দিয়ে যাতায়াত করা বিপুলসংখ্যক গাড়ি কিছুক্ষণ পরপর ২১টি জেলার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে। আর লঞ্চের কর্মচারীরা বলছেন, পদ্মা সেতু দিয়ে বাসের যাত্রী বেড়ে যাওয়ায় লঞ্চের যাত্রী কিছুটা কমেছে।

সায়েদাবাদের হানিফ পরিবহনের টিকেট বিক্রেতা বাদল বলেন, এবার আগাম টিকেট বিক্রির সংখ্যা কমেছে। যাত্রীদের ভিড় অন্যান্যবারের চেয়ে কিছুটা কম মনে হচ্ছে। বিশেষ করে পদ্মা সেতুর কারণে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে গাড়ির সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। এর সুফল পাচ্ছে ওই অঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। এ ছাড়া অন্যান্য অঞ্চলের যাত্রীদের চাপ আগের মতোই আছে।

ঘরমুখী অপেক্ষারত যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্যান্যবার ঢাকার রাস্তায় যে যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হয়, এবার তা কিছুটা কম। রাস্তায় গাড়ির চাপ থাকলেও বাস, রেলস্টেশন ও লঞ্চঘাটে পৌঁছাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে পড়তে হচ্ছে না। তারপরও বিপুলসংখ্যক মানুষ তিন-চার দিনের মধ্যে ঢাকা ছাড়ায় সমস্যা তো হবেই।

পিরোজপুরের উদ্দেশে রওনা হওয়া আসাদুজ্জামান বলেন, প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ি যাচ্ছি। সায়েদাবাদ থেকে সাকুরা পরিবহনের টিকেট সংগ্রহ করেছি। স্টেশনে পৌঁছাতে আগেরবারের মতো ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি।

ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করার জন্য এ বছর ঢাকার ২০টি পয়েন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ ৪৬টি পয়েন্ট নির্ধারণ করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। গাবতলী বাসটার্মিনাল পরিদর্শনে গিয়ে এ তথ্য জানিয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, যেগুলো বেশি বেশি যানজটপূর্ণ পয়েন্ট, সেখানে দুই শিফটে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ আছে। আমাদের মনিটরিং টিমও কাজ করছে। আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ঈদের আগে ও পরে সাত দিন রাস্তায় থাকবেন, যাতে কোনো ধরনের সমস্যা না হয়।

নৌপথ : পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর নৌপথে যাত্রীদের চাপ কমেছে। তবে এবার তীব্র তাপদাহে অনেকেই নৌপথে বাড়ি ফিরছেন। যাত্রী পরিবহনে সন্তুষ্ট লঞ্চ মালিকরা। তারা বলছেন, পদ্মা সেতু দিয়ে সড়ক পথে যাত্রী পরিবহন বেড়েছে, কমেছে নৌপথের যাত্রী। তীব্র গরমে আরামের যাত্রা হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষরা নৌপথকে বেছে নিয়েছেন।

এদিন ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের কোনো অভিযোগ শোনা যায়নি, সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় অনেককে টিকেট কাটতে দেখা যায়। বৃহস্পতিবার স্বস্তিতে নৌপথে ঢাকা ছেড়েছেন অসংখ্য ঘরমুখো মানুষ। ভোরের আলো না ফুটতেই টার্মিনালে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। যান চলাচলের জন্য পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সদরঘাটে যাত্রীর ভাটা পড়ে। যাত্রী সংকটে কমতে শুরু করে লঞ্চের সংখ্যাও। তবে আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে যাত্রীর চাপ বাড়ায় পুরোনো রূপে ফিরেছে লঞ্চ টার্মিনাল।

কয়েক দিন আগেও যেখানে যাত্রীর অভাবে নির্দিষ্ট সময়ে লঞ্চ ছাড়ত না সেখানে এখন লঞ্চগুলো পূর্ণ যাত্রী নিয়ে ঘাট ছাড়ছে। খালি নেই লঞ্চগুলোর কেবিন, ডেকেও দেখা গেছে যাত্রীদের ভিড়। এ ছাড়া সকালে লঞ্চ না থাকলেও বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, হাতিয়া, পটুয়াখালীগামী যাত্রীদের অনেকেই এসেছেন কেবিন বুকিং দিতে এবং আগেভাগেই ডেকে জায়গা নিতে। প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা সদরঘাটে আসা শুরু করে। বিকাল গড়াতেই বাড়তে শুরু করে যাত্রী। চাঁদপুরগামী যাত্রী ইসমাইল হোসেন ইমন বলেন, ঈদ উপলক্ষে গরমের তীব্রতা বাড়ার আগেই বাড়ি পৌঁছাতে পারি সে জন্য সেহরি খাওয়ার পরপরই পরিবার নিয়ে টার্মিনালে এসেছি। লঞ্চে সিট পেয়েছি। যাত্রী চাপও খুব বেশি মনে হচ্ছে না। এবার স্বস্তিতেই বাড়ি ফিরতে পারছি।

পটুয়াখালীর যাত্রী জুলহাস জাবেদ বলেন, ছুটিতে বাড়ি যাব কি না এ নিয়ে দ্বিধায় ছিলাম। কেবিন বুকিং দিতে এসেছি। কাক্সিক্ষত কেবিন পেয়েছি। বিকাল ৫টায় লঞ্চ ছাড়ার কথা।
ঢাকা-বরিশাল রুটের এমভি সুরভী-৭ লঞ্চের ম্যানেজার নূরে আলম বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে আমাদের যাত্রীর সংখ্যা একেবারেই কমে গেছে। ঈদ উপলক্ষে যাত্রী বেশ বেড়েছে। বেশিরভাগ কেবিনগুলো আগে থেকেই বুকিং দেওয়ায় খালি যাচ্ছে না।

পরিবারসহ ভোলায় ঈদ করতে যাওয়া উজ্জল আহমেদ বলেন, সদরঘাটে যাত্রী না থাকলেও ঈদের সময় চাপ থাকবে। সেই চিন্তায় সকালেই বেরিয়ে পড়েছি। রাতের যাত্রা আরামদায়ক হলেও রমজানে সবার সমস্যা হয়ে যায়। এখানে কেবিন পেয়েছি, ভাড়াও ঠিক আছে। বেশ আরামেই বাড়ি পৌঁছাতে পারব বলে আশা করছি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল সংস্থার মহাসচিব মো. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী সময়ের আলোকে বলেন, ছুটির প্রথম দিন আশা অনুযায়ী যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে। অনেকেই আরামদায়ক যাত্রা হিসেবে নৌপথকে বেছে নেন। আরামে পরিবার-পরিজনকে নিয়ে নৌপথের বিকল্প নেই।

সুন্দরবন-১৬ লঞ্চের ম্যানেজার শরীফুল ইসলাম বলেন, যাত্রীরা কেবিনে স্বাচ্ছন্দে ঈদ যাত্রা করতে পারছে। গত ঈদে লঞ্চের কেবিনের চাহিদা ছিল না। সে আশঙ্কা থেকে এখন যে আসছে বা যোগাযোগ করছে আমরা বুকিং নিয়ে নিচ্ছি।

নৌ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম বলেন, যাত্রী কম তবে আগের চেয়ে বেড়েছে। এমনটা থাকুক সবসময়, লঞ্চ শ্রমিক তাদেরও তো বেঁচে থাকতে হবে। পদ্মা সেতু হয়েছে স্বাভাবিকভাবে যাত্রী আমাদের কমেছে। সড়কপথে ৪-৫ ঘণ্টায় যাতায়াত করা যাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলে। সেখানে গুলিস্তান থেকে সদরঘাট আসতেই তিন ঘণ্টা লেগে গেলে যাত্রী কীভাবে হবে। লঞ্চ টার্মিনালে নির্বিঘ্নে আসতে পারলে এবার নৌপথে যাত্রী বাড়ত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তাসরিফ লঞ্চের ম্যানেজার জসিম উদ্দিন বলেন, আমাদের লঞ্চ ঢাকা থেকে ভোলার চরফ্যাশন, হাতিয়া রুটে চলে। নতুন একাধিক লঞ্চ এসেছে। কারণ যাত্রী ভাগাভাগি হয়ে গেছে, খরচ ওঠাতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। তবে প্রস্তুতিতে কোনো ত্রুটি নেই আমাদের। যাত্রীদের নিরাপদ ও স্বস্তির যাত্রা নিশ্চিত করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন মালিকরা। দৃষ্টিনন্দন করতে অনেক লঞ্চ রং করা হযেছে। অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, বয়া, জ্যাকেট সব প্রস্তুত আছে।

রেলপথ : ট্রেনযোগে ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে গত সোমবার। নিরাপদ ঈদযাত্রার প্রথম দুদিন যাত্রীদের তেমন চাপ ছিল না। তবে গত বুধবার ভিড় দেখা যায়। আর গতকাল ভোর থেকেই নাড়ির টানে হাজারও মানুষকে কমলাপুরমুখী হতে দেখা গেছে। যাত্রীর নিরাপত্তায় র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে রয়েছে অন্যান্য বাহিনী।

বৃহস্পতিবার স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, যাত্রীদের টিকেট দেখিয়ে স্টেশনে প্রবেশ করতে হচ্ছে। এ ছাড়া যারা অনলাইনে টিকেট সংগ্রহ করতে পারেননি তারা যাত্রার আগে কাউন্টার থেকে স্ট্যান্ডিং টিকেট সংগ্রহ করছেন। তবে অনেকেই স্ট্যান্ডিং টিকেট সংগ্রহ করতে পারছেন না। স্ট্যান্ডিং টিকেটের জন্য ভোর থেকেই যাত্রীরা কাউন্টারগুলোর সামনে ভিড় করেন। তবে শতকরা ২৫ ভাগ টিকেটের বেশি বিক্রি করা হচ্ছে না। সার্বিকভাবে এবার ট্রেনে ঈদযাত্রাকে স্বস্তিদায়ক বলছেন যাত্রীরা। এখন পর্যন্ত ভোগান্তির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) যাত্রীর চাপ অনেক বেশি। আগামীকাল আরও বাড়তে পারে। তবে চাপ থাকলেও যাত্রীরা শৃঙ্খলা মেনে স্টেশনে প্রবেশ করছেন বলে জানান স্টেশন ম্যানেজার। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের ট্রেন সময়মতো ছেড়েছে।

স্ট্যান্ডিং টিকেটের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের আসন নির্দিষ্ট। আর নির্দিষ্ট আসনের ২৫ শতাংশ টিকেট স্ট্যান্ডিং হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এ টিকেটের চাহিদার চেয়ে যাত্রী বেশি হওয়ায় অনেকে নাও পেতে পারেন।

অন্যদিকে এবার শিডিউল বিপর্যয় ঠেকাতে উত্তরাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা সাতটি ট্রেন রাজধানীর বিমানবন্দর স্টেশনে থামানো হচ্ছে না বলে রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত এই ট্রেনগুলোর ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রাবিরতি বন্ধ থাকবে। উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকাগামী ট্রেনগুলো হলো একতা এক্সপ্রেস, দ্রুতযান, পঞ্চগড়, নীলসাগর, কুড়িগ্রাম, লালমনি ও রংপুর এক্সপ্রেস।

সড়কপথ : গাবতলীতে মাইকে ডেকেও যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবারও বাসটার্মিনালগুলোতে যাত্রীদের তেমন কোনো চাপ দেখা যায়নি। অনেক কাউন্টারে ডেকে ডেকে বাসে যাত্রী তুলতে দেখা গেছে। যাত্রী কম থাকায় ট্রিপ বাড়াননি পরিবহন মালিকরা।

গতকাল গাবতলীতে বিআরটিসি ঈদ স্পেশাল সার্ভিসের টিকেট বিক্রেতা আবদুল খালেক বলেন, দেখতেই তো পারছেন যাত্রীর কী অবস্থা। যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না মাইকে ডেকেও। এ বছর যাত্রী তেমন নেই। দেখা যায়, মাইকে ডেকে ডেকে টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। সেখানে কথা হয় রংপুরের যাত্রী শাহালমের সঙ্গে। তিনি বলেন, মাত্র এসেই টিকেট কিনলাম। অন্যান্য বছরের মতো কোনো চাপ নেই, কোনো তাড়াহুড়ো নেই। যাত্রী ডেকে ডেকে আনছে।

গোপালগঞ্জের যাত্রী সাহিন মোল্লা বলেন, গাবতলী এসেছি সকাল সাড়ে ১০টায়। ১১টার বাসের টিকেট কাটলাম, তবে সিট কভার পাইছি। এক ঘণ্টা অপেক্ষা করলে ভালো সিট পেতাম, কিন্তু এখন সিটের থেকে বড় কথা- যত দ্রুত বাড়ি যাওয়া যায়। এই সময়ে এসে এত অল্প সময়ে যেতে পারছি, এটাই তো বেশি। অন্য বছরগুলোতে তো ভেঙে ভেঙে যাওয়া লাগছে। কত ঝামেলা পোহাইছি তখন।

ঈগল পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার বলেন, এই বছর আমরা ট্রিপ কমিয়ে দিয়েছি। যেহেতু যাত্রী কম, তাই বাসের সংখ্যা বাড়াইনি। যাত্রী সব সায়েদাবাদ থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যাচ্ছে।

এ ছাড়া মহাসড়কে যানজট না থাকলেও গরম ও বাড়তি ভাড়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটের যাত্রীরা। বেশি ভাড়া দিয়েও গাড়ির অপেক্ষায় বসে থাকতে হয় তাদের। এ বছর এ দুটি মহাসড়ক দিয়ে প্রায় ১০ লাখের বেশি মানুষ বাড়ি ফিরবে বলে ধারণা পুলিশের।

বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেটগামী বাস কাউন্টারগুলোতে দেখা গেছে যাত্রীদের ভিড়। চট্টগ্রামমুখী লেনের নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড, শিমরাইল, মোগরাপাড়া ও সিলেট রুটের তারাব, বরাব, ভুলতা এলাকায় বাস কাউন্টারগুলোতে অবস্থানরত যাত্রীরা গরমে হাঁসফাঁস অবস্থায় পড়েন। একটু ছায়ার আশায় অনেকে আশ্রয় নেন সড়কের পাশের স্থাপনাগুলোতে। বাস কাউন্টারগুলোতে গাড়ির অপেক্ষায় বসে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেক শিশু ও বৃদ্ধরা। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় নারীদের। তার মধ্যে আবার বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন কাউন্টারের কর্মচারীরা।

চাঁদপুরের মতলবের যাত্রী অলি আহমেদ বলেন, তাপদাহ এত বেশি যে, ছোট বাচ্চাটা অসুস্থ হয়ে গেছে। একটি দোকানের ভেতরে বসিয়ে রেখেছি। এখন অপেক্ষা বাস এলে উঠব। যতক্ষণই লাগুক বাড়ি তো যেতে হবে। সেখানে মা-বাবা আছেন সবাইকে নিয়েই তো ঈদ করতে হবে।

চট্টগ্রামগামী এক যাত্রী বলেন, প্রতিটি টিকেটে ১০০ টাকা বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এই গরমের মধ্যে বেশি টাকা দিয়ে টিকেট কিনেও গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
খবর: সময়ের আলো

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই রকম আরো সংবাদ

© All rights reserved © 2020 Aplusnews.Live
Design & Development BY Hostitbd.Com

অনুমতি ছাড়া নিউজ কপি দন্ডনীয় অপরাধ। কপি করা যাবে না!!