করোনাকালীন সময়ে রংপুরের নারী উদ্যোক্তারা প্রণোদনা প্যাকেজ না পাওয়ায় তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন।
রংপুরের সদর ও মিঠাপুকুর, কুড়িগ্রামের সদর ও উলিপুর , নীলফামারীর সদর ও সৈয়দপুর উপজেলার ২৮০ জন নারী উদ্যোক্তা প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় না নেয়ায় ও প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় আসতে নানাবিধ হয়রানিতে তারা ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন নারী উদ্যোক্তারা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর চেম্বার মিলনায়তনে দি এশিয়া ফাউন্ডেশন আয়োজিত উইএসএমএস প্রকল্পে নারী উদ্যোক্তাদের সাথে অর্থনীতি বিষয়ক সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের প্রাথমিক গবেষনায় জানা যায়, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে নারীরা অপেক্ষাকৃত বেশি প্রতিকূলতার শিকার হচ্ছে। সরকারের লকডাউন শিথিল করা হলেও মহামারীর প্রভাব এখনো সর্বত্র বিস্তৃত।
কভিড-১৯ কালীন সময়ের গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে নারীদের অর্থনৈতিক কর্মকা- পুরুষদের তুলনায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, সীমান্ত বন্ধ থাকা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখায় গুরুতর বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছেন। ক্ষুদ্র , ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (এমএসএমই) খাত নারীদের জন্য বিশাল কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদান করে।
এশিয়া ফাউন্ডেশনের একটি অভ্যন্তরীণ গবেষণায় দেখা গেছে, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী উদ্যোক্তা এখনো তাদের প্রাক মহামারী অবস্থায় ফিরে যাওয়ার লক্ষ্যে পুঁজির জন্য সংগ্রাম করছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্ষুদ্র শিল্পের অবস্থান এবং উল্লেখযোগ্য পরিমান নারী উদ্যোক্তা তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন।
দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের মার্কেট ডেভোলপমেন্ট অফিসার ইরফানুল বারী জানান, সংবাদকর্মীরা জনসাধারনের স্বার্থ রক্ষার্থে, এবং বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে। সমাজের সেবামূলক এবং উন্নয়নমূলক কাজগুলোকেও তুলে ধরতে সংবাদকর্মীদের অবদান অনস্বীকার্য।
দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের ফিল্ড টিম লিডার সরদার আকরামুজ্জামান জানান, অনেক নারী উদ্যোক্তাদের সফলতার,
সংগ্রামের এবং উদ্ভাবনের গল্পগুলো অনেক ক্ষেত্রে তাদের নিজ নিজ সামাজিক যোগাযোগ (ফেসবুক, ইউটিঊব) এর মাধ্যমেই শোভা পায়, যার ফলে সেই গল্পগুলোর বিস্তার হয় না।
রংপুরের নারী উদ্যাক্তা শামসুন নাহার, লাইজুতুনে জান্নাত ও নাসিমা আক্তার জানান, আমরা করোনাকালীন সময়ে কোন প্রণোদনা পাইনি। আমরা পাটজাত পণ্যের কুটিরশিল্পের কারখানা করে শ্রমিকদের দিয়ে বিভিন্ন পন্য তৈরি করে বাজারজাত করতাম। পুঁজি না থাকায় এখন কারখান বন্ধ রাখা হয়েছে। ব্যাংকেও কোন প্রণোদনার সহযোগিতা পাচ্ছি না।
দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের মার্কেট ডেভোলপমেন্ট অফিসার শাহমুদা শরিফা জানান, একটি বড় পরিকল্পনার সূচনা হিসেবে সংবাদকর্মী এবং নারী উদ্যোক্তা, শিক্ষাবীদ এবং সরকারী সংস্থার জন্য একটি কমন ফেসবুক প্ল্যাটফর্ম তৈরী করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে খুলনা এবং রংপুর এ শুরু করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। যেখানে উইএসএমএস’র এক হাজারের উপর সুবিধাভোগী নারী যুক্ত হবেন।
রংপুর সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম আব্দুল বারেক জানান, সরকারী ব্যাংক তাদের নীতিমালা মেনেই প্রণোদনা প্রদান করছে। সরকারী নিয়মে কাউকে বাদ দেয়া হয় না। বেসরকারী ব্যাংকগুলোর বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলতে পারবে। তবে এসএমই খাতে প্রণোদনার বিষয়ে মিটিং চলছে। সরকারী নির্দেশনার বাইরে কেউ নয়।