চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ট্রেন দুর্ঘটনার আগে একটি গ্রুপ ছবি তুলেছিলেন মাইক্রোবাসের ১৪ যাত্রী। বয়সে তারা সবাই তরুণ। ছবিতে সবাইকে হাস্যোজ্জ্বল দেখা গেছে। তবে কে জানতে এটাই তাদের শেষ হাসি! ছবিটি তোলার কিছুক্ষণ পরই ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
মাইক্রোবাসটি রেললাইনের লেভেল ক্রসিংয়ে উঠে পড়লে ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে মাইক্রোবাসে থাকা ১১ জন যাত্রী ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। বেঁচে যান তিনজন। বর্তমানে তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।শুক্রবার (২৯ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার খৈয়াছড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হতাহতদের সবার বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আমান বাজারে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, মাইক্রোবাসে ১৪ জন যাত্রী ছিলেন। তারা খৈয়াছড়া ঝরনা দেখে ফিরছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতীর ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
পূর্ব রেলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনসার আলী জানান, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী ওই লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার মুখে খৈয়াছড়াগামী পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসটি লাইনে উঠে পড়ে। সংঘর্ষের পর মাইক্রোবাসটি ট্রেনের ইঞ্জিনের সঙ্গে আটকে যায়। ওই অবস্থায় মাইক্রোবাসটিকে বেশ খানিকটা পথ ছেঁচড়ে নিয়ে থামে ট্রেন।
আলমগীর নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, লেভেল ক্রসিংয়ে উঠে পড়া মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বড়তাকিয়া স্টেশনের কাছে নিয়ে যায় ট্রেন।রেল কর্মকর্তা আনসার আলী বলেন, ট্রেন আসায় গেটম্যান সাদ্দাম বাঁশ ফেলেছিলেন। কিন্তু মাইক্রোবাসটি বাঁশ ঠেলে ক্রসিংয়ে উঠে পড়ে।
তবে দুর্ঘটনার সময় গেটম্যান ছিলেন না বলে জানান মফিজুল হক নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি বলেন, ঘটনার সময় জুমার নামাজ পড়তে মসজিদে গিয়েছিলেন গেটম্যান।
মিরসরাইয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুর রহমান জানান, হাটহাজারী থেকে আসা ওই মাইক্রোবাসে মোট ১৪ জন ছিলেন। তাদের মধ্যে ১১ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। বাকিদের চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।