দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে মিরাজুল ইসলাম মিরাজ (১৪) নামের এক কিশোরকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে গত বুধবার তার দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া কিশোররা হলো-আসিফ ইসলাম (১৬) ও লিটন ইসলাম (১৬)। আসিফ উপজেলার নশরতপুর গ্রামের নদীরপাড়ের হবিবর রহমানের ছেলে এবং লিটন রানীপুর গ্রামের মুন্সিপাড়ার নজরুল ইসলাম ওরফে নজুর ছেলে।
চিরিরবন্দর থানা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১৪ মার্চ রাতে উপজেলার আলোকডিহি ইউনিয়নের গছাহার গ্রামের আজিপাড়ার সন্নিকটে সেচ পাম্প সংলগ্ন বুড়িরস্থান নামক স্থানে এ হত্যাকাণ্ডে ঘটে। এক পথচারী মিরাজের গলাকাটা মরদেহ দেখতে পেয়ে থানা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই রাতেই মিরাজের মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ মরদেহ ১৫ মার্চ সকালে দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলে ওইদিন সন্ধ্যায় পারিবারিক কবরস্থানে মিরাজের দাফন সম্পন্ন হয়। এ হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে নিহত মিরাজের পিতা আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। যার মামলা নং ১৬/৭৮।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, প্রায় ১ বছর আগে মিরাজ আসামি আসিফ ইসলামের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা ধার নেয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৪ মার্চ রাত আনুমানিক ৯টার দিকে আসামি আসিফ তার মোবাইল ফোন দিয়ে মিরাজকে ডেকে নেয়। এরপর মিরাজের বাইসাইকেলে ৩ জন ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। রাত সাড়ে ৯টায় বা মধ্যবর্তী সময়ে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে। নির্জনস্থান নিশ্চিত করে আসিফের নির্দেশে লিটন পেছন দিক থেকে গলায় চাকু দিয়ে পোঁচ দিলে মিরাজ বাইসাইকেল থেকে মাটিতে পড়ে যায়।
এ সময় মিরাজের মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য লিটন গলায় চাকু দিয়ে আরও একটি পোঁচ দেয়। মিরাজের মৃত্যু নিশ্চিত হলে ব্যবহৃত ছোরাটি পাশের ভুট্টাক্ষেতে ছুড়ে ফেলে দিয়ে তারা দুজন ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ সময় তারা তাদের পরা কাপড় খুলে বাড়ির পাশে ময়লাস্তূপে ফেলে দেয়। নিহত মিরাজের মোবাইল ফোনটি সুইচ অফ করে আসিফ তাদের বাড়িতে রেখে দেয়।
চিরিরবন্দর থানার ওসি মো. বজলুর রশিদ আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়টি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন। সেখানে তিনি জানান, আরও অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে।