লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে নিছক গুজব ছড়িয়ে জুয়েলকে (৫০) হত্যা করা হয়েছে। সেখানে কোরআন অবমাননার সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জাতীয় মানবধিকার কমিশনের অভিযোগ ও তদন্ত টিমের পরিচালক আল মাহমুদ ফাউজুল কবির।
এসময় ওই টিমের সদস্য সচিব জাতীয় মানবধিকার কমিশনের অভিযোগ ও তদন্ত টিমের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, টিমের সদস্য লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পি এম রাহসিন কবির ও লালমনিরহাটের সিনিয়ন সহকারী পুলিশ সুপার তাপস সরকার উপস্থিতি ছিলেন।
এরআগে রোববার সকাল ১০ টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত টিম। ওই সময় বুড়িমারী ডাক বাংলোতে মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, জনপ্রতিনিধি, থানার ওসি ও প্রশাসনের কর্মকর্তা ছাড়াও বিভিন্ন জনের পৃথক পৃথকভাবে সাক্ষ্য নেয়া হয়।
বিকালে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ডাকবাংলো থেকে বেড়িয়ে আসার সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নে জবাবে জাতীয় মানবধিকার কমিশনের অভিযোগ ও তদন্ত টিমের পরিচালক আল মাহমুদ ফাউজুল কবির বলেন, ‘আমরা মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জামে, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহ বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলেছি। এতে মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, মৃত জুয়েল কোরআন অবমাননা করেনি। নিছক গুজব ছড়িয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
ঢাকা গিয়ে আগামী ৭ দিনের মধ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়া বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রংপুর থেকে আসা সহিদুন্নবী জুয়েল বুড়িমারী কেন্দ্রীয় বাজার জামে মসজিদে ‘কোরআন অবমাননা’ করেছে বলে গুজব ছড়ানো হয়। গুজবে কান দিয়ে শত শত লোক সেখানে জড়ো হতে থাকে। পরে তাকে উত্তেজিত জনতা রংপুরের বাসিন্দা সহিদুন্নবী জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যার পর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় পৃথক পৃথকভাবে দায়ের করা ৩টি মামলায় গত শনিবার পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যায় নতুন করে কাউকে গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, ‘আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। গ্রেফতারের বিষয়টি আমরা কালকে (আজ সোমবার) বলবো”।