পুলিশের বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে নগরীর মধ্য গনেশপুর এলাকায় মমিনুল ইসলামের মেয়ে জান্নাতুল মাওয়া নবম শ্রেনীর ছাত্রী এবং মোকসেদুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া আখতার মীম এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। তারা দুজনেই চাচাতো জেঠাতো বোন। তারা একই বাসায় পাশাপাশি ঘরে থাকতো। জান্নাতুল মাওয়ার বাবা মা তাদের স্বজনদের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুরে গিয়েছিলো। তবে মীমের বাবা মা বাসাতে থাকলেও তারাও বাইরে ছিলো। দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে নিহত সুমাইয়া আখতার মীমের প্রেমিক মাহফুজার রহমান রিফাত মীমকে ফোন করে তাদের বাসায় আসে। তারা দুজনেই মীমদের থাকার ঘরে অবস্থান করে। এদিকে মীমের চাচাতো বোন জান্নাতুল মাওয়া হঠাৎ করে মীমদের ঘরে ঢুকে মীম ও তার প্রেমিক রিফাতকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে সে বিষয়টি তার বাবামাকে বলে দেবে বলে জানায়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মীম ও তার প্রেমিক রিফাত জান্নাতুল মাওয়ার ঘরে প্রবেশ করে তাকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে। এবং আতা¥হত্যা বলে চালিয়ে দেবার জন্য মুখে বিষ ঢেলে দেয় এবং গলায় ব্লেড দিয়ে কিছু অংশ কেটে ফেলে। এ ঘটনার পর রিফাতের সাথে মীমের কথা কাটাকাটি হয় রিফাত যখন বুঝতে পারে মীমও হয়তো জান্নাতুল মাওয়াকে মেরে ফেলার ব্যাপারে তার নাম বলে দিতে পারে। সে কারনে রিফাত মীমকে হত্য করার পরিকল্পনা করে। সাথে সাথে মীমকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে তার লাশ ঘরের মধ্যে সিলিং ফানের মধ্যে ঝুলিয়ে দিয়ে রিফাত তাদের বাসা থেকে বের হয়ে যায়।
দুপুর দেড়টার দিকে ঘরের মধ্যে সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় মীমের লাশ দেখে এবং জান্নাতুল মাওয়াকে অন্যঘরে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে আশে পার্শ্বের লোকজন ট্রিবল নাইনে ফোন করে জানায়। এরপর পুলিশ এসে তাদের দু বোনের লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ জানায় জান্নাতুল মাওয়ার গলায় ব্ল্ডে দিয়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে কেন কিভাবে তারা আত্মহত্যা করলো বা কেউ তাদের হত্যা করেছে কিনা নিহত হবার কোন কারন তাৎক্ষনিক ভাবে পুলিশ নিশ্চিত করতে পারেনি। খবর পেয়ে মেট্রোপলিটান পুলিশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মারুল আহাম্মেদ উপ কমিশনার শহিদুল্লা কাওছার কোতয়ালী থানার ওসি আব্দুর রশিদ সহ উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনা স্থলে এসে হিহত হবার কারন উদঘাটন করার চেষ্টা করেন। পরে দু বোনের লাশ উদ্ধার করে এ্যাম্বুলেন্সে করে রংপুর ডকেল কলেজে ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার নিহত মীম ও জান্নাতুল মাওয়ার বেশ কয়েকজন স্বজন সহ ১০/১২জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ থানায় নিয়ে আসে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে দু বোনের সাথে কারো প্রেমের সম্পর্ক ছিলো কিনা বিভিন্ন বিষয় তাদের সাথে কথা বলেন। তবে মীমের মোবাইল ফোনে পাওয়া রিফাতের নম্বরে বিভিন্ন সময়ে কথা বলা এবং হত্যাকান্ডের আগে তাদের বাসায় আসার আগেও কথা হবার বিষয়টি তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে পুলিশ নগরীর মধ্য বাবু খা মহল্লা থেকে রিফাতকে গ্রেফতার করে। তবে রিফাতের সাথে আরো কেউ ছিলো কিনা আরো কোন ঘটনা নেপথ্যে আছে কিনা পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।
এ ব্যাপারে মেট্রোপলিটান পুলিশের মিডিয়া শাখার উপ পুলিশ কমিশনার উত্তম প্রসাদ পাঠকের সাথে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান আমরা রিফাতকে গ্রেফতার করেছি তার কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য পাচ্ছি পুরো বিষয় রোববার সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হতে পারে বলে জানান তিনি। তবে মেট্রোপলিটান পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার শহিুল্লা কাওছার ও কোতয়ালী থানার ওসি আব্দুর রশিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।