অসাধারণ ব্যক্তি জীবনের অনেকটা সময় মানবপ্রেমে উৎসর্গ করে যাচ্ছেন। সাধারণ ভাবে অসাধারণ মানব প্রেমী মহান মানুষটিকে নিয়ে জানার চেষ্টা সর্বত্রই না থাকলেও সেবা পাওয়া মানুষের কাছে যেনো একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে চিরচেনা বিপ্লবী কবি-সাংবাদিক হায়াত মাহমুদ মানিক। নিজের কর্মকান্ড শুধু মসজিদ-মাদরাসা স্থাপন, কুরআন শিক্ষা ইত্যাদির মাঝে সীমাবদ্ধ না রেখে এতিমদের পুনর্বাসন, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, বিধবাদের সহায়তা প্রদান, যৌতুক প্রতিরোধ, মাদকদ্রব্য নির্মুল, বৃক্ষরোপণ, বেকারদের প্রশিক্ষণ ইত্যাদি সেবাকর্মের মাাধ্যমে মানুষের আরও কাছে ঘেঁষতে চেষ্টা করেন তিনি। আর্ত-মানবতার সেবায় ইসলামের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেন তার সেবাদানের মধ্যদিয়ে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই পার্থিব লালসা ও ব্যক্তিগত ভোগ-বিলাসের রোগ থেকে নিজেকে দূরে রাখছেন তিনি।
জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সবার মাঝে ব্যাপক সেবা কর্মের মাধ্যমে প্রমাণ করে দিয়েছেন ইসলাম শুধু মুসলমানের জন্যই আসেনি বরং পৃথিবীর সব মানুষের জন্যই এসেছে। অন্যের ব্যথায় সমব্যথী হওয়া এবং পরের বিপদে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করা একটি মহৎ গুণ বিপ্লবী কবি ও সাংবাদিক হায়াত মাহমুদ মানিকের। এক ধরণের নেকীর কাজ, হিতৌষী মনোভাব ও সহমর্মিতার গুণ ছাড়া মানবিকতা ও মহানুভবতার বিকাশ পূর্ণতা পায় না। সেজন্যে বিপ্লবী কবি ও সাংবাদিক হায়াত মাহমুদ মানিক ছুটছেন সেবার নেশায়। খলিফা হারুনুর রশীদের আদর্শ সামনে রেখে মাথায় পাগরি পরে পথ চলেন সর্বদা তিনি। এই মানবপ্রিয় মানুষটি পীরগাছার কৈকুড়ি ইউনিয়নের মকরমপুর গ্রামের বাসিন্দা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে ৭দিন কারাবরণ করা সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা (ডিজিএম জনতা ব্যাংক অবঃ) অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসেন ও মাতা-মৃত বেগম বাহার দম্পতি বড় সন্তান হায়াত মাহমুদ মানিক। বিগত ১৯৬৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
হায়াত মাহমুদ মানিক স্কুল-কলেজের গন্ডি পেরিয়ে ১৯৯৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স পাশ করেন। ১৯৯৬ সালে শিক্ষা জীবন শেষ করে তার জন্মভূমিতে ফিরে এসে বিপ্লবী কবি ও সাংবাদিক হায়াত মাহমুদ মানিক রংপুর মানুষের জন্য কল্যাণ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন নামের একটি সামাজিক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটান। ওই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে হত দরিদ্র, দুঃস্থ, অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে সেবা বিলিয়ে দেয়ার প্রয়াসে তৎকালিন সময়ে ৪ কেজি চাল, ৮টি ডিম ও ২০টাকা করে প্রত্যেককে দিয়ে সেবার মহান ব্রত চালিয়েছেন। ঈদ উৎসব আসলে শাড়ি-লুঙ্গি,সেমাই-চিনি,মাংস বিতরণ এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের উৎসবে ধুতি পাঞ্জাবী ও খাদ্য সামগ্রী তুলে দিতেন তিনি। এভাবে মানব কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন তিনি। এছাড়াও এলাকার হতদরিদ্র, দুস্থ, অসহায় ও ছিন্নমূল পরিবারের মেয়ের বিয়েতে বিয়ের শাড়িসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র দিয়ে সেবাদানের নজির স্থাপন করেছেন পুরো এলাকায়।
বঙ্গবন্ধু কাপে নাম দিয়ে এলাকার উঠতি বয়সি ছেলে কিশোরদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা করা উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি করতে খাওয়ার ব্যবস্থা করতেন। এই মানব প্রেমি এলাকায় শিশু কিশোরদের আরবি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে মোক্তব খুলছিলেন হায়াত মানিক। মানুষের মাঝে শান্তি প্রতিষ্টার জন্য এখনো কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। এছাড়াও তিনি লাইব্রেরি ও পাঠদানের জন্য একটি প্রতিবন্ধী স্কুল খুলেছেন এলাকায়। মকরমপুর মসজিদে আসা তাবলিগ- জামায়াতের মুসল্লিদের জন্য এক বেলা খাওয়ার আয়োজনও করে থাকেন এই মানুষটি। বাবা-মায়ের সম্পদে তার মানব সেবা চলে আসছে সেবা কার্যক্রম।
পীরগাছার চৌধুরানীর বকসীর বাজারে প্রাইমারী হেডমাষ্টার মোঃ মোক্তার হোসেনের মেয়ের মদিনা মনোয়ারের সঙ্গে বিবাহ হয়। মানিক এর দম্পতির দুই মেয়ে ও এক ছেলে। সংসার জীবনে থেকে ও মানবসেবা বিন্দুমাত্র কমেনি মানিকের। বড় মেয়ে কারমাইকেল কলেজ হতে ম্যানজমেন্টে শেষ বর্ষ অধ্যায়নরত, ছোট মেয়ে ৯ম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত এছাড়াও ছেলে মোরসালিন হায়াত হৃদয় প্রথম শেণীতে পড়ছে। ব্যবসা এবং দাতব্য কার্যক্রম ছাড়াও তিনি বেশ কয়টি বই এবং অসংখ্য কবিতা লিখেছিলেন। লেখালেখি করা তার নেশা। এজন্য তাকে সংস্কৃতিকর্মী পাড়ায়ও বিপ্লবী কবি হিসেবে খ্যাতি দেয়া হয়েছে।
মায়ের পাওয়া সম্পদের সামাজিক ভাবে অন্যদের সাহায্য করার জন্য ব্যবহার করে যাচ্ছেন মানবসেবক বিপ্লবী কবি ও সাংবাদিক হায়াত মাহমুদ মানিক। এর আগে ২০০১ সালে পীরগাছা-কাউনিয়া (রংপুর-৪ আসনে সংসদ নির্বচনে মনোয়ন দাখিল করেছিলেন। পীরগাছা হতে রংপুর শহরের দক্ষিণ মুলাটোল এলাকায় বাসাবাড়ি থাকার সুবাদে তিনি রংপুর পৌরসভার নির্বাচন ২০০৪ সালে চেয়ারম্যান পদে অংশগ্রহণ করেছিলেন। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক মানুষের মুখে জানা যায় পীরগাছা শুধু নয় রংপুর নগরীরও অনেক হতদরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিন যাবত আর্থিক সহায়তা করে আসছেন। তার সহায়তায় মেডিকেল কলেজে অনেক শিক্ষার্থী ডাক্তারী পড়ছেন। আবার তার সহায়তায় অনেকে স্কুল -কলেজেও পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন। রংপুরে আশার স্বপ্ন মরীচিকায় পরিণত হওয়ার মতো পত্রিকার পাতায় সংবাদ দেখলে তিনি পড়াশোনার খরচ বহনের দায়িত্বও নেওয়ার কথা বলে থাকেন। সফল ব্যবসায়ী, দানশীল, মানবপ্রেমী এই মানুষটি বুঝমান হওয়ার পর থেকে মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নেও বিশেষ অবদান রেখে চলেছেন। নগরী সড়ক পরিচ্ছন্নকর্মী স্বামী হারানো অর্ধশত বয়সি এক অসহায় নারী জানান অনেক কষ্ট করে মেয়েটিকে বড় করেছি। তাকে পাত্রস্থ করতে অনেক টাকা দরকার। এমন কথা জানতে পেরে মানবপ্রেমিক হায়াত মাহমুদ মানিক তার মেয়ের বিয়ের জন্য একজন ভালো পাত্র খুজছেন।
ইতোমধ্যে মেয়ের মাকে বলছেন, মেয়ের বিয়েতে নিজেই নগদ ১ লাখ টাকা পাত্রকে দিবেন তিনি দম্পতির জীবন যাতে সুখ-শান্তিতে কাটে। তবে বর যাতে ভালো হয়, ভালো বর (ছেলে) সন্ধান চান তিনি। অবিচল ভাবে চলা এই মানুষটি দৈনন্দিন তাহাজ্জত ও ইসাহাক নামাজ আদায় শেষে রংপুর কারামতিয় মসজিদে ফজরের নামাজ আদায় করে সব শ্রেণী পেশার মানুষের খোজ-খবর দৈনন্দিন রাখেন কার কি দরকার। যার সমস্যা যেমন, সমস্যাসমূহ শ্রবন করে নিরসনে সাধ্যমতো চেষ্টা করে থাকেন তিনি। রাস্তা, ফুটপাতে শুয়ে থাকা কিংবা চায়ে, স্টলে কাজ করা শ্রমজীবি শিশু-কিশোরদের খাবার সরবরাহ ও শীতবস্ত্র কিনে দেয়ারও নজির রেখেছেন। এ ব্যাপারে, হায়াত মাহমুদ মানিক বলেছেন সবকিছু গড-গিভটেড। আমার বাবা-মার অনুপ্রেরনায় আজ আমি মানুষের সেবা করতে পারছি। মায়ের ইচ্ছে টুকু পূরণ করতে পারি। অসহায় ও মানবতার সেবায় কাজ করতে চাই এমন মন্তব্য করেন তিনি। রংপুর বিভাগের মানুষের জন্য নিঃস্বার্থভাবে মানব সেবা তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য-উদ্দেশ্য। এ জন্য রংপুর বিভাগের মানুষের ভালবাসা চান বিপ্লবী কবি ও সাংবাদিক হায়াত মাহমুদ মানিক।