বাংলাদেশের স্বাধীনতা যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে, তাদের কথা স্মরণ করে দেশকে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২০ বিতরণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নস্যাৎ করা হয়, যে সাতই মার্চের ভাষণ এই দেশের মানুষকে উজ্জীবিত করেছিল সেই ভাষণ নিষিদ্ধ হয়, ইতিহাস থেকে জাতির পিতার নামটা পর্যন্ত মুছে ফেলার প্রচেষ্টা করা হয়, ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়। পরবর্তীতে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে বাংলাদেশের ইতিহাস মানুষের সামনে তুলে ধরে।
“আমরা তো মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি। বিজয়ী জাতি কেন আমরা অন্যের কাছে হাত পেতে চলব, মাথা নিচু করে চলব? বিজয়ী জাতি সারাবিশ্বে বিজয়ীর বেশেই চলবে। পঁচাত্তরের পর আমরা সেই সম্ভাবনা এবং অধিকার হারিয়েছিলাম। কিন্তু সেটা আবার পুনরুদ্ধার করে জাতির পিতার যে স্বপ্ন এবং যে চেতনায় লাখো শহীদ বুকের তাজা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনে দিয়ে গেছে,তাদের সেই আত্মত্যাগের কথা, লাখো মা-বোনের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেই আমরা এই বাংলাদেশকে আবার গড়ে তুলতে চাচ্ছি ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা হিসেবে।”
অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। অন্যান্য বছর ২৫ মার্চ স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হলেও এই বছর করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে নির্দিষ্ট সময়ে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি বলেও জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “প্রত্যেকটা মানুষ যখন একটা সমাজের জন্য, একটি জাতির জন্য, একটি দেশের জন্য অবদান রাখে তাদের সম্মান করা, গুণীজনের সম্মান করা এটা আমি মনে করি আমাদের কর্তব্য। সেই থেকে আমরা এই ব্যবস্থাটা নিয়েছি, দিচ্ছি স্বাধীনতা পুরস্কার।”
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে খুন, ধর্ষণ, গণহত্যায় সহযোগিতা করতে তাদের এদেশীয় কিছু দোসর আলবদর, আল শামস বাহিনী গড়ে তুলেছিল উল্লেখ করে স্বাধীনতার পর জাতির পিতা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে যুদ্ধাপরাধে জড়িত প্রায় ২১ হাজারের মতো পাকিস্তানি বাহিনীর দোসরকে গ্রেপ্তার করে তাদের বিচার শুরু করেছিলেন বলে জানান শেখ হাসিনা।