রংপুরে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে গণ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত দুই আসামী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বুধবার বিকেলে সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর আলমের কাছে তারা জবানবন্দি দেন। এর আগে একই আদালতে ধর্ষিতার ২২ ধারা মতে জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে এবং আসামীদের শনাক্ত করে আদালতে ঘটনার বিবরণ প্রদান করেন ধর্ষিতা ছাত্রী।
মামলায় অভিযুক্ত মেট্রো ডিবি পুলিশের এএসআই রায়হানুলকে গ্রেফতার করে রংপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে। এর আগে সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই পুলিশ সুপার জানান যেকোনো সময় রায়হানুলকে গ্রেফতার করা হবে। পরে রাত নয়টার দিকে এএসআইকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মঙ্গলবার ভোরে লালমনিরহাট সদরের পূর্ব মাজাপাড়া এলাকার করি মাহমুদের ছেলে বাবুল হোসেন (৩৮) এবং পূর্ব থানা পাড়ার মৃত কাচু মিয়াার ছেলে আবুল কালাম আজাদ (৪০)কে গ্রেফতার করে পিবিআই।
রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকার ময়নাকুঠি কচুটারিতে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের এএসআই রায়হানুল ইসলাম। প্রেমের সূত্র ধরে গত শুক্রবার ওই ছাত্রীকে ক্যাদারের পুল এলাকার ডা. শহিদুল্লাহ মিয়ার ভাড়াটিয়া সুমাইয়া আক্তার মেঘলা ওরফে আলেয়াার বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ কওে এসএসআই রায়হানুল। পরে গত রোববার ভাড়াটিয়া মেঘলা ওরফে আলেয়া ও তার সহযোগী সুরভি আক্তারের সহায়তায় বাবুল হোসেন ও আবুল কালাম আজাদ মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। ঘটনার দিন ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ তাকে ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় মেঘলা বেগমকে আটক করে পুলিশ। পরে রাতে আরেক সহযোগী সুরভিকেও আটক করা হয়। আটক মেঘলা ও সুরভি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবান বন্দি না দেয়ায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাদেও জেল হাজাতে পাঠানো হয়। এদিকে বুধবার বিকেলে বাবুল ও আজাদ আদালতে ধর্ষণের কথা স্বীকার কওে আদালতে জবানবন্দি দেন।
এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে পুলিশ সদস্য রায়হানুল ইসলাম ওরফে রাজুসহ দু’জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হারাগাছ থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরে ওই রাতে অসুস্থ ওই ছাত্রীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করায় পুলিশ। সোমবার মামলাটি হারাগাছ থানা থেকে রংপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়।
পিবিআই পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন বলেন, দুই আসামী আদালতে ঘটনার কথা স্বীকার করেছে।