রংপুরে জামাল মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে প্রায় তিনকোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে পরিদর্শন করছেন জেলা প্রশাসক,রসিক মেয়র ও মহানগর দোকান মালিক সমিতির আহ্বায়ককসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ।
রংপুরে শাহ্ জামাল মার্কেটে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট প্রায় দেড় ঘণ্টায় চেষ্টায় আগুণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। মঙ্গলবার ভোরে নগরীর স্টেশন রোড গ্রান্ড হোটেল মোড়স্থ কাপড়ের এই মার্কেটে আগুনের সূত্রপাত হয়। কীভাবে আগুন লেগেছে তা এখনো জানা যায়নি।রংপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক ওহিদুল ইসলাম জানান, সকালে খবর পেয়ে প্রথমে ৮টি ইউনিট এবং পরে আরো দুইটি ইউনিটসহ মোট ১২টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন তারা। তবে আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে এখনও কেউ নিশ্চিত হতে পারেননি।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানা যায়নি। এদিকে মার্কেটের ভিতরের অন্তত ত্রিশটি কাপড়ের দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এই আগুনে ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। তবে কোনো প্রাণহানি হয়নি।আগুন লাগার খবর পেয়ে ছুটে আসেন মিজানুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ী। মার্কেটের ভিতরে থাকা তার চারটি দোকানের সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বলে দাবি করেন। এই ব্যবসায়ী বলছিলেন, আগুনে আমার সবশেষ হয়ে গেল। এতো দিনে যা সঞ্চয় করেছি, সবকিছু আগুনে পুড়ে শেষ। কোনো মালামাল রক্ষা হয়নি। দোকানে টিনের চাল উড়ে গেছে। লাখ লাখ টাকার মেশিন, স্টকে রাখা কাপড়সহ ছাই হয়ে গেছে। ঈদের আগের প্রস্তুতি নিতে সব দোকানে অনেক কাপড় ছিল। কিন্তু আগুনে সবার অবস্থা আজ একই হলো।
শাহ্ জামাল মার্কেটের নীচে পাইকারি কাপড় বিক্রিসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক তৈরির ছোট ছোট কারখানা এবং ফ্রিজ কোম্পানির গোডাউন ছিল। তবে এখানে পাইকারি ও তৈরি কাপড়ের দোকান বেশি ছিল।
হোসেন নামে একজন ব্যবসায়ী জানান, ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা চেষ্টা করেছে, কিন্তু আমাদের কিছুই রক্ষা হয়নি। আগুন দ্রæত ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়। মার্কেটের সামনের দোকানগুলো রক্ষা হলেও ভিতরে অনেকের মালামাল,পুঁজি সবই আগুনে পুড়ে গেছে। আমাদের ঈদের ব্যবসা আর হবে না। সব পুঁজি রুজি তো আগুন খেয়ে নিল।মার্কেটের পাশের তেঁতুল তলা জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন আবু বকর সিদ্দিক জানান, ফজরের নামাজের পর আমরা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির শব্দ শুনে বের হয়ে দেখি আগুন লেগেছে। কাপড় ও মেশিনে আগুন লাগায় আগুন দ্রæত ছড়িয়ে পড়ছে। এ কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের অনেক সময় লাগে। তবে কীভাবে আগুন লেগেছে তা তিনি বুঝতে পারছেন না। এদিকে সকাল সোয়া নয়টায় পর পুরোপুরি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
এসময় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে মার্কেটের আশপাশ। শাহ্ জামাল মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হোসেন জানান, ওই মার্কেটে প্রায় সকলেই কাপড় ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে মার্কেটে আগুন দেখে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হয়।
অগ্নিকান্ডে মার্কেটের দুই লাইনের ১৫-২০টি দোকান পুড়ে যায়। এতে প্রায় ২ কোটি ৩৭ লক্ষ্য টাকার ঊর্ধ্বে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অত্র মার্কেট ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস ব্যাপারী ও সাধারণ সম্পাদক শফিক আহমেদ ভোলা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে অগ্নিকান্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান,রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, কাউন্সিলর মাহবুবার রহমান মঞ্জু,রংপুর মহানগর দোকান মালিক সমিতির আহ্বায়ক কাজী মোঃ জুননুন,সদস্য সচিব অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, সদস্য আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন,রশিদুস সুলতান বাবলু, গ্রান্ড হোটেল মোড় ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল মতিন মতি,বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল মার্সেন্ট এসোসিয়েশন রংপুরের সভাপতি শাহ নেওয়াজ রহমান লাবু প্রমুখ