রংপুর-ভেন্ডাবাড়ি আঞ্চলিক সড়কের মিঠাপুকুর উপজেলার রাণীপুকুর এরশাদ মোড়ে নির্মিত হচ্ছে মহান আল্লাহ তায়ালার গুণবাচক ৯৯ নাম সংযুক্ত দৃষ্টিনন্দন ও সুবিশাল স্তম্ভ। স্তম্ভটির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। নির্মান কাজ সম্পন্ন হলে নান্দনিক লাইটিং সিস্টেমের সঙ্গে অটোমেটিক সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টায় এখানে মহান আল্লাহ তায়ালার ৯৯টি নাম উচ্চারিত হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাণীপুকুর ও খোড়াগাছ ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এরশাদ মোড়ে সু-বিশাল একটি স্তম্ভ¢ নির্মাণ কাজ চলছে। বর্গাকার স্তম্ভটির চারপাশে আল্লাহর গুণবাচক ৯৯ নাম আরবিতে ও বাংলা উচ্চারণসহ ওপর থেকে নিচে লেখা হয়েছে। নিচে রয়েছে বর্গাকার, যা আবার দুই স্তরের গোলাকার বেদি দিয়ে পরিবেষ্টিত। কারুকার্য সম্পন্ন না হলেও অবয়ব ফুটে উঠায় দুর-দুরান্ত থেকে লোকজন এটি দেখতে আসছেন ও ছবি তুলছেন। ধর্মভীরু মুসলমানদের মুখে শোনা যাচ্ছে প্রশংসা।
স¤প্রতি এই স্তম্ভের নির্মাণাধীন একটি ভিডিও চিত্র ‘ডেইলী মিঠাপুকুর’ নামে একটি ফেসবুক আইডিতে ভাইরাল হয়। তারপর বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষজন আসছেন নির্মানাধিন স্তম্ভটি দেখতে।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, রংপুর দর্শনামোড় থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে এই স্থানটি একসময় মরাকাটা নামে পরিচিত ছিল। সেখানে ছিলনা কোন দোকান পাট। জরুরী কোন দরকার ছাড়া ভয়ে সন্ধার পর রাস্তার এই স্থান দিয়ে কেউ চলাচল করার সাহস করতো না। রাস্তার দু’ধারে গভীর গর্ত ছিল। মৃত গরু ফেলে দেয়া হতো সেখানে। সেসময় জায়গাটি মরাকাটা নামে পরিচিতি ছিল। নব্বই দশকের শেষের দিকে জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সেখানে নির্বাচনী সভা করেন।
স্থানটিতে পাঁচটি রাস্তা সংযুক্ত থাকার কারণে সেদিন সেখানকার (মরাকাটা) নাম দেয়া হয় পাঁচ মাথা এরশাদ মোড়। আস্তে আস্তে দোকানপাটে ভরে যায় মোড়টি। বর্তমানে এরশাদ মোড় নামে পরিচিত। তবে, স্তম্ভটির কারুকার্য শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি উন্মোচন করা হলে ‘আল্লাহু চত্বর’ হিসেবে এটি পরিচিতি পাবে বলে ধারনা স্থানীয়দের।
জানা যায়, উপজেলার খোড়াগাছ ইউপি চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান আসাদ’র প্রচেষ্টায় আল্লাহ’র ৯৯টি নাম সংযুক্ত স্তম্ভের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয় গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর। তিনি নিজেই এটির ডিজাইন করেছেন। নির্মাণ কাজ অনেকটা শেষ হলেও এখনও কারুকার্যের কিছু কাজ বাকি রয়েছে। দুই ফুট বাই দুই ফুট বর্গাকার এ স্তম্ভটির উচ্চতা হবে ২৭ ফুট। যার ২২ ফুটে রয়েছে আল্লাহর ৯৯টি নাম এবং উপরে পাঁচ ফুটে বড় করে থাকবে ‘আল্লাহু’ লেখা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী গোলাম রসূল বলেন, প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন স্তম্ভটি দেখতে আসছেন। এখনও তো কাজ শেষ-ই হয়নি। হইলে আরও সুন্দর লাগবে। বাহির থেকে আরও অনেকেই দেখতে আসবে। আরেক স্থানীয় ডা. আসলাম মিয়া বলেন, এরশাদ মোড়ে আল্লাহ্ গুনবাচক নাম দিয়ে স্তম্ভ স্থাপিত হওয়ায় দৃষ্টি নন্দন হয়েছে। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই দর্শনার্থীদের ভিড় জমে উঠেছে এরশাদ মোড়ে।
স্তম্ভটি নির্মাণের উদ্যোক্তা ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বলেন, গত বছরে টিআর প্রকল্পের এক লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যায়ে স্থানীয় বুড়াজুম্মা মোড়ে ‘আল্লাহু স্তম্ভ’ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু বুড়াজুম্মা মোড়টি সংকুচিত ও ছোট হওয়ায় সেখানে দৃষ্টিনন্দন হবে না ভেবে স্তম্ভটি এরশাদ মোড়ে নির্মাণের উদ্যোগ নেই। এজন্য মোড়ের অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে স্তম্ভটির নির্মাণ কাজ শুরু করি। বর্তমানে সমন্বিতভাবে অর্থায়ন করে স্তম্ভটির নির্মাণ কাজ চলছে। আগামী ১২-১৫ দিনের মধ্যে নির্মান কাজ শেষ হবে আশা করছি।