যৌতুকের টাকা না দেয়ায় স্ত্রী মর্জিনা খাতুনের শরীরে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে আগুন দিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করার অপরাধে স্বামী মোশারফ হোসেনকে মৃতুদন্ড এবং তার সহযোগী হবিবর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। আদালতে রায় ঘোষনার সময় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মোশারফ হোসেন অনুপস্থিত ছিল।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল ১ বিচারক যাবিদ হোসেন এ রায় প্রদান করেন। সেই সাথে আদালত প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদায়ের আদেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে ও মামলার বিবরনে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ১৫ অক্টোবর রংপুর নগরীর মন্থনা এলাকায় স্বামী মোশারফ হোসেন যৌতুকের দাবি কৃত টাকা না পাওয়ায় রাত সাড়ে ৮ টার দিকে মর্জিনা শরীরে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন দেবার আগে তার আত্মীয় হবিবর রহমান মর্জিনার দুই হাত চেপে ধরে রেখেছিলো। মর্জিনার আত্ম চিৎকারে আশেপার্শ্বের লোকজন তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে।
সেখানে দুদিন মৃত্যুর সাথে পাজ্ঞা লড়ে ১৭ অক্টোবর হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যায় মর্জিনা। চিকিৎসাধিন অবস্থায় মর্জিনা খাতুন হাসপাতালে পুলিশ ও কর্তব্যরত চিকিৎসকের সামনে তাকে তার স্বামী মোশারফ হোসেন ও হবিবর রহমান মিলে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেবার কথা মৃত্যুকালিন জবানবন্দিতে জানায়।
এ ঘটনায় নিহত মর্জিনা খাতুনের বড় ভাই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করে। মামলায় ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে স্বামী মোশারফ হোসেনকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেছেন সেই সাথে অপর আসামী হবিবর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও দুজনকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা প্রদান করার আদেশ দেন। ঘটনার পর থেকে ঘাতক স্বামী মোশারফ হোসেন পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী ও ক্রোকি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত।
সরকার পক্ষের আইনজিবী পিপি রফিক হাসনাইন রায়ে সন্তষ প্রকাশ করে বলেন, আমরা আদলতে প্রমান করতে পেরেছিয়ে আসামসী মোশারফ হোসেন তার স্ত্রীতে যৌতুকের জন্য আগুনে পুড়ে হত্য করেছে। আমরা উপযুক্ত বিচার পেয়েছি বলে জানান তিনি।
আসামী পক্ষের আইনজিবী কাজী আকরাম হোসেন উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়ে বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পাইনি।