করোনাাভাইরাসের কারনে ছয় মাস ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বর্তমানে অনেকেই চলেছেন ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে। আবার অনেকেই দোকান ভাড়াই দিতে পারছেননা। যার ফলে অনেকটাই হতাশ ব্যবসায়ীরা। শুধু তাই নয়, স্টেশনারী ব্যবসার সাথে যেসব শ্রমিক জড়িত অনেকেই এখন বেকার হয়ে পড়েছেন। সরেজমিনে স্টেশন এলাকা প্রেসক্লাব মার্কেট, পুরাতন বই লাইব্রেরী, সাতমাথা, নব্দীগঞ্জ ও মানচিত্র মার্কেটসহ আরো কয়েকটি মার্কেট ঘুরে ঘুরে দেখা যায়, খুুব একটা হইচই নেই দোকানগুলোতে। মাঝে মধ্যে দু-এক জন ক্রেতা আসছেন আবার কখনও গন্টার পর ঘন্টা বসে থাকছেন দোকান মালিক ও কর্মচারীরা। দোকান মালিকদের তথ্য মতে, আর খুচরো প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিক্রি হতো ১০-১৫টাকা।
কিন্তু করোনার কারনে এখন বিক্রি নেই। সাতমাথা এলাকাার স্টেশনারী ব্যবসায়ী ইসলাম মিয়া বলেন, আমরা খুব করুন অবস্থায় আছি। বর্তমানে প্রতিদিন ১ হাজার ১২শ টাকা বিক্রি হচ্ছে। নরমাল সময়ে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বিক্রি হতো প্রতিদিন। এই ১০-১২শ’ টাকা বিক্রি করে আমাদের তেমন কিছুই হয়না। দোকান ভাড়া আছে, আমাদের থাকা খাওয়ার খরচ আছে, বাসা ভাড়া আছে এমন একটা অবস্থা খাওয়ার পয়সা উঠেনা, ঘর ভাড়া কোথা থেকে দেবো। বর্তমানে আমরা ঋণগ্রস্থ।
আরেক ব্যবসায়ী মমিনুর মিয়া বলেন, ৬/৭ মাস ধরে ব্যবসা একেবারেই শেষ । এখন যে দোকানের মালামাল দেখছন, এগুলো নতুন করে ঋণ নিয়ে কেনা। স্কুল- কলেজ না খুললে আমাদের ব্যবসা হয় না, স্কুল কলেজের সঙ্গেই আমাদের ব্যবসা। এখন সেই অপেক্ষাতেই আছি। সিটি বাজার এলাকার মনিরুল হক জানান, করোনার সাধারণ ছুটিতে ২মাস একেবারেই বন্ধ ছিল দোকান। পরবর্তীতে সরকার সব অফিস আদালত খুলে দেয় সীমিত পরিসরে। তখন থেকে শুরু হয় আবারও স্টেশনারি ব্যবসা। তবে স্টেশনারি ব্যবসা জড়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে।
যার ফলে ব্যবসা শুরু হলেও মুধুমাত্র ব্যবসা ধরে রাখার জন্য মাসের পর মাস পরিচালনা খরচ বহন করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের । পার্কের মোড়ের ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন, করোনা পরবর্তী সময়টা আমাদের খুব খারাপ অবস্থা গিয়েছে। ব্যবসা ছিল এককেন্দ্রিক। শুধু অফিস আদালতে মালামাল সাপ্লাই করি এখনও। অন্যদিকে স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটিতে ব্যাপক মালামাল লাগতো সারা বছর, সেই অংশটা এখনও বন্ধ আছে। এখন আমাদের বিক্রি হয় ১৫ থেকে ২ হাজার টাকা।
এদিকে বিদেশি মালামালের জন্য ঋণের চাপ আছে। আমাদের এখন একটা চাওয়া, সরকারের কাছে স্কুল -কলেজ খুলে দিলে হয়তো আমাদের ব্যবসা আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। লালবাগের ব্যবসায়ী ইকরাম হোসেন বলেন, আগে যখন সবকিছু খোলা ছিল তখন অনেক ভালো ব্যবসা হতো। এখন স্কুল বন্ধ, তবে অফিস -আদালত খোলা থাকার কারণে টুকটাক বিক্রি হচ্ছে।
এতে করে দোকান ভাড়া অন্তত দিতে পারছি। আগেই স্কুলের জন্য খাতা, ডায়েরি, ফাইলসহ অনেক কিছু অর্ডার হতো। এখন এগুলো বিক্রি বন্ধ, সেইসঙ্গে কাজও বন্ধ আছে। স্টেশনারি দোকানের শ্রমিকের সংখ্যা কমেছে। মাসের পর মাস বেতন দিতে না পারায় মালিকরা আর শ্রমিকদের ধরে রাখতে পারেনি। বাধ্য হয়ে অনেককেই অব্যাহতি দিতে হয়েছে। স্টেশনারি ব্যবসায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টর্ াএখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অপেক্ষায়। তাদের আশা স্কুল কলেজ খুললেই ব্যবসা আবার ঘুরে দাঁড়াবে।