ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে করা মানহানির মামলার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছেন বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেন, অতি উৎসাহী দুজন এ দুটি মামলাটি করেছেন। এ সময় মামলা প্রত্যাহারের আহ্বানও জানান তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে নগর ভবনের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তাপস।
তিনি বলেন, ব্যক্তিগত আক্রোশে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের নানা অভিযোগ ও বিরূপ মন্তব্য মানুষের কাছে হাস্যরসে পরিণত হয়েছে। তার বিরুদ্ধে যে দুটি মামলা হয়েছে, তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অতি উৎসাহী হয়েই হয়তো তারা (মামলার বাদী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারোয়ার আলম এবং কাজী আনিসুর রহমান) মামলা করেছেন। তাদের করা মামলা আমি প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, মামলার বিষয়ে আমি পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেব। আমি এই বিষয়ে আর কোনো কথা বলতে চাই না।
এদিকে একই সময়ে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে সাইদ খোকনের পক্ষে সমাবেশ করেছেন তার সমর্থকরা।
এর আগে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসকে নিয়ে মানহানিকর বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা গ্রহণের বিষয় আদেশের জন্য আগামী ১৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাকিম রাজেশ চৌধুরী মঙ্গলবার এই তারিখ নির্ধারণ করেন।
ওই দিন আদালতের আদেশের পর জানা যাবে মামলাটি গ্রহন করা হয়েছে নাকি খারিজ করা হয়েছে। আইনজীবীরা জানান, সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলাটি আদলত গ্রহন করার পর পরবর্তী নির্দেশনাও দেবেন বিচারক।
এর আগে গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর গোপিবাগে স্লুইসগেট ও পাম্প হাউস পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের কাছে শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, মেয়র সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হবে। তাপস বলেন, সাঈদ খোকন মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন। আমি তার বক্তব্য শুনে অবাক হয়েছি। তিনি নিজে চুনোপুঁটি দুর্নীতিবাজ হিসেবে স্বীকার করেছেন। আর আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অবশ্যই এটা মানহানিকর হয়েছে। আমি এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেব।
বাদী সারোয়ার আলম বলেন, সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন গত ৯ জানুয়ারি হাইকোর্টের সামনে বর্তমান মেয়র তাপসের বিরুদ্ধে যে ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন তা তাপসের সম্মান ক্ষুণ্ণ করেছে। তার রাজনৈতিক জনপ্রিয়তাকে নস্যাৎ করার উদ্দেশে সাঈদ খোকনের এ বক্তব্য মানহানিকর। যে কারণে তিনি সংক্ষুব্ধ হয়ে সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন। সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় অপরাধ আমলে নিয়ে বিচারের আবেদন করা হয়েছে।
এরপরই, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের মানসম্মানের বাজারমূল্য জানতে চেয়ে গণমাধ্যমে ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন ডিএসসিসির সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। সোমবার বিকেলে সাঈদ খোকনের এই বিবৃতি পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হবে—বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে সাবেক মেয়র ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেছেন, তাপসের মানসম্মানের বাজারমূল্য কত? মামলার পূর্ণাঙ্গ বিবরণী পাওয়ার পর সেটা আমি জানতে পারব। এ মামলার আইনি মোকাবিলার পাশাপাশি রাজপথে দেনা–পাওনার হিসাব হবে, ইনশা আল্লাহ।
সিটি করপোরেশনের টাকা তাপস তার মধুমতি ব্যাংকে সরিয়ে ফেলেছে। সে সরাসরি বলে না কেন? কালকে সে আমার এসব কথা গুরত্ব দেয় নাই। সোমবার মামলা ২টি করে দিলো বলে ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশনে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্নভাবে যারা টাকা লেনদেন করেছেন তারা সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন।
সাবেক মেয়র খোকনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়েছে। পুলিশের তদন্ত সংস্থা পিবিআই তদন্তও করছে।